রহমত নিউজ ডেস্ক 10 July, 2023 06:48 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচনকালীন রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতোই বাংলাদেশের নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে সহযোগিতা করবে।
সোমবার (১০ জুলাই) সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ইইউ দেশের ছয়জনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। তারা খুঁটিনাটি সব বিষয়ে আলোচনা করবেন। ইইউ নির্বাচন অবজার্ভ করবে, ক্লোজলি মনিটরিং করবে। সরকার সবসময়ই নির্বাচনি পর্যবেক্ষাদের স্বাগত জানায়। ৪১ ভিয়েনা কনভেনশনের নীতিমালা অনুযায়ী কূটনীতিকরা দায়িত্ব পালন করবেন আমাদের আপত্তি নেই। নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা হয়। সেজন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক থাকলে ভালো হয়। তারা সরেজমিনে দেখতে পারবেন নির্বাচন কেমন হয়। পর্যবেক্ষকরা নিজেরাই দেখবেন। সাক্ষাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদ বিলুপ্ত বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে কথা হয়নি। তারা চায়-নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক হোক, গণতন্ত্র আরও ম্যাচিরিউড হোক। বিএনপির ইস্যু নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে, সরকারের উন্নয়ন সমৃদ্ধি নিয়ে কথা হয়েছে। তারা একটি সুন্দর নির্বাচন কামনা করেছে। ইইউ প্রতিনিধি দল বিএনপি বা কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নেবার বিষয়ে আহ্বান করবে কি না সেটা প্রতিনিধি দলের নিজস্ব বিষয়।
তিনি আরো বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগের কথা বলেনি। তারা ভালোটা আশা করেছে। নির্বাচন নিয়ে তাদের (ইইউ) উদ্বেগ কোন জায়গায়? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো উদ্বেগের কথা তারা বলেনি। তারা ভালোটা আশা করেছে। কোনো খারাপ কিছু নিয়ে কোনো কথা বলেনি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হোক, সেটা তারা চেয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী ও পরিপক্কতা অর্জন করুক, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতি এবং চলমান বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।তাদের বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার নিয়মিত (নির্বাচনকালীন) কাজ করে যাবে এবং এই সরকার তখন নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে, সহযোগিতা করবে, যাতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হয়। আর সরকারি দল তখন শুধু রুটিন ওয়ার্ক পালন করবে। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই নির্বাচন হবে। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি এবং তাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ ও অর্থবহ।
সড়কমন্ত্রী বলেন, পর্যবেক্ষক নিয়ে আমরা বলেছি, সুস্বাগত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পর্যবেক্ষক আসবেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন, নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করবেন। পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব অনুযায়ী তাঁরা দায়িত্ব পালন করবেন। পর্যবেক্ষকদেরও দায়িত্ব পালনে ভিয়েনা কনভেনশনের নীতিমালা আছে। সেই নীতিমালার মধ্যে বিদেশি কূটনৈতিকেরা দায়িত্ব পালন করবেন। এখানে আমাদের কোনো আপত্তি থাকার প্রশ্ন নেই। বরং নির্বাচন নিয়ে নানান কথা হয়, যে কারণে পর্যবেক্ষকদের থাকাটা স্বাগত জানাই। তাঁরা সরেজমিন দেখতে পাবেন নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে। কাজেই এ নিয়ে বাধা-বিবাদের সুযোগ থাকবে না।’ ইইউর ছয়জনের একটি দল এসেছে। তারা খুঁটিনাটি বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করবে। তা এখানে আলোচনা হয়নি। তারা (ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল) আওয়ামী লীগের সঙ্গেও বসবে ১৫ জুলাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদের বিলুপ্তি, সরকারের পদত্যাগ এসব নিয়ে কোনো কথাই হয়নি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে। তবে উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়েছে।
এ মাসের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল ভারত যাচ্ছে। বিজেপির সঙ্গে বৈঠক আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো বিষয় নেই। এটি হচ্ছে, আমার নেতৃত্বে একটি দল চার বছর আগে ভারতে গিয়েছিলাম। এরপর রামমাধবের নেতৃত্বে ভারত থেকেও একটি দল এসেছিল। এটি দলের সঙ্গে দলের একটা বিষয়। এই প্রশ্নটি ভারতের সঙ্গে করেন, কিন্তু চীনের সঙ্গে যে প্রতিবছর সফর বিনিময় করি, সেটি তো বলেন না। এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেন না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে কেন কথা বলব? দরকারটি কী?